খুলনা, বাংলাদেশ | ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  প্রাথমিক শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ে আগামী ২৩ জুন থেকে আমরণ অনশনের ঘোষণা
  ২০০ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলসহ চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায়, কাল সেমিনার
  ২১ জুন ঢাকায় জনসভার অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে আবেদন জামায়াতের

জুলাই বিপ্লব ও নজরুল

মো: আরাফাত হোসেন

জুলাইয়ের ২৫ তারিখ, আমার এক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করে, কি হবে এবার? আমি বললাম, পতন। সে একটু অবাক। পতন হবে মানে? বললাম, দেখিস খুব দ্রুতই তার পতন হবে। সে বললো, তুই কি করে নিশ্চিত হচ্ছিস? বললাম, নিশ্চিত না তবে পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছে তার পতন খুব সন্নিকটে।

প্রত্যেকটি বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পেছনে সাহিত্যিক সমাজের একটি বড় ভূমিকা থাকে। জুলাই বিপ্লবে ও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। কোটা আন্দোলন থেকে জুলাই বিপ্লবে পরিণত হওয়ার প্রতিটি পদে পদে আছে সাহিত্যিকদের পদচারণা। আর সেই বিপ্লবী সাহিত্যিকদের মহানায়ক আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আন্দোলন-সংগ্রামে নজরুল সবসময় অগ্রগামীদের কাতারে থাকেন। জুলাই বিপ্লবেও তার অন্যথা ঘটেনি।স্বৈরাচারের হায়েনারা যখন বুলেটের মাধ্যমে ছাত্র জনতার আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করে তখন সেই বুলেটের জবাব হয়ে ওঠে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার বিপ্লবী চরণ-
“বল বীর, বল উন্নত মম শির”।

বাঙালি কখনো শির নিচু করে না। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে ২৪ এর জুলাই বিপ্লব প্রত্যেকটি জায়গায় নজরুলের “উন্নত মম শির” হয়ে উঠেছে বিপ্লবীদের মাথা নিচু না করার অমর বাণী। ১৬ই জুলাই শহীদ আবু সাঈদ যেভাবে বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দেন তা ‘ উন্নত মম শির’ এর যথার্থ প্রতিফলন।

জুলাই বিপ্লবের প্রতিটি স্তরে স্তরে নজরুল যেন বিদ্রোহী বীর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের পর যে আন্দোলনের গণজোয়ার সৃষ্টি হয় তাতে বারুদ নিক্ষেপ করে নজরুলের “কারার ঐ লৌহ কপাট/ভেঙে ফেল কররে লুপাট/রক্ত জমাট শিকল পূজার পাষাণ বেদী। ”

এই গান যেন জুলাই বিপ্লবকে অবলম্বন করেই রচিত হয়েছে বলে মনে হয়।

” তোরা সব জয়ধ্বনি কর।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর।
ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল- বোশেখীর ঝড়। ”

বিদ্রোহী কবিতার যে প্রলয় নিশান দেখা যায়, তার পূর্বেই বিপ্লবীর জয় কে সুনিশ্চিত করতে যেন এই জয়ধ্বনি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রাম যেমন ছিল সাত কোটি মানুষের বাঁচার সংগ্রাম, ২৪ এর জুলাই বিপ্লবও তেমনি বাংলাদেশের নির্যাতিত, নিপীড়িত জনতার মুক্তির সংগ্রাম। আর নজরুল যেন এই সংগ্রামের একজন প্রথম সারির যোদ্ধা। বাংলার আন্দোলন-সংগ্রামে নজরুল ঘুরে ফিরে চলে আসেন তাঁর বিপ্লবী সাহিত্যকর্মের দ্বারা। তাইতো যখনই আমাদের ক্রান্তিকাল এসে উপস্থিত হয় তখনই নজরুলের আবির্ভাব হয় ‘আগুনের ঝান্ডাবাহী’ হিসেবে সকল অন্যায় অত্যাচারের বিনাশ করতে।

লেখক : শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!